না বুঝে করিলে কাজ শেষে হায় হায়! – পস্তাতে তো হবেই।

না বুঝে করিলে কাজ শেষে হায় হায়!

শিবনাথ শাস্ত্রী

এক রাজার তিন পুত্র ছিল। ওই রাজার রাজধানীতে একসময় চোরের ভয় হইল।

প্রজারা দলবদ্ধ হইয়া রাজার নিকটে আসিয়া বলিল, ‘মহারাজ, আমরা চোরের ভয়ে আর ঘর করিতে পারি না।প্রতি রাত্রে কোথা হইতে যে চোর আসে, আমরা কিছুই বুঝিতে পারি না; জাগিয়া থাকি, চোর ধরিতে পারি না।’

রাজা তিন পুত্রকে ডাকিয়া বলিলেন, ‘তোমরা তিন উপযুক্ত পুত্র থাকিতে, আমার রাজধানীতে চোরের ভয় হয়, এ বড় লজ্জার কথা।’

তাঁহারা তিন ভাতায় পরামর্শ করিলেন যে, সেই রাত্রে তাঁহারা তিনজনে নগরের চারিদিকে পাহারা দিবেন।

বড়ো ভাই প্রথম রাত্রে পাহারা দিবেন, মেজো ভাই মধ্য-রাত্রিতে পাহারা দিবেন ও সর্ব কনিষ্ঠ শেষরাত্রে জাগিবেন। তদনুসারে তাঁহারা তিনজনে সেই রাত্রে নগরে পাহারা দিতে লাগিলেন।

প্রথম ভাই প্রথম রাত্রে অশ্বারোহণে নগরের চারিদিকে ঘুরিতে লাগিলেন, কাহাকেও দেখিতে পাইলেন না; দ্বিতীয় ভাই রাত্রি দ্বিপ্রহরের সময়ে অশ্বারোহণে বাহির হইলেন, তিনিও কিছু দেখিতে পাইলেন না।

সর্বশেষে তৃতীয় ভাই তৃতীয় প্রহরে বাহির হইয়া রাজবাড়ির দ্বারে গিয়াছেন, এমন সময় দেখিতে পাইলেন যে, এক রূপবতী রমণী রাজভবন হইতে বাহির হইয়া যাইতেছেন।

দেখিয়া রাজকুমার জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘আপনি কে, এত রাত্রে কোথায় যান? আপনি দাঁড়ান, আমাকে পরিচয় না দিয়া যাইতে পারিবেন না।’ রমণী দাঁড়াইলেন।

রাজকুমার নিকটে আসিলে সেই নারী বলিলেন, ‘আমি এই রাজ্যের রাজলক্ষ্মী, আজ রাত্রেই রাজার মৃত্যু হইবে, সেই জন্য আমি রাজ্য ছাড়িয়া যাইতেছি।’

রাজকুমার বলিলেন, ‘আপনি অনুগ্রহ করিয়া অপেক্ষা করুন, যাহাতে রাজার মৃত্যু না হয়, তাহা আমি করিতেছি।’ রাজলক্ষ্মী রাজকুমারের অনুরোধে ফিরিয়া আসিলেন।

ইহার পর রাজকুমার একেবারে পিতার শয়নমন্দিরে গিয়া উপস্থিত হইলেন। দেখিলেন এক প্রকাণ্ড কালসাপ রাজার খাটের পায়া জড়াইয়া উঠিতেছে।

রাজা ও তাঁহার পার্শ্বের খাটে রানি অঘোরে ঘুমাইতেছেন; আর একটু পরেই কালসাপ রাজাকে কামড়াইবে। ইহা দেখিয়া রাজকুমার নিজের তরবারি খুলিয়া এক কোপে কালসাপের গলা দ্বিখণ্ড করিয়া ফেলিলেন।

তৎপরে তাহাকে খণ্ড খণ্ড করিয়া একটি পানের রাটার মধ্যে পুরিয়া রাখিলেন।

পুরিবার সময় দেখিতে পাইলেন রাজার পার্শ্বে যে তাঁহার বিমাতা ঘুমাইতেছিলেন তাঁহার গায়ে কালসাপের রক্ত পড়িয়াছে। তখন তাঁহার মনে ভয় হইল যে, যদি সেই বিষাক্ত রক্তে বিমাতার প্রাণ যায়।

যদিও বিমাতা তাঁহাকে দেখিতে পারিতেন না, ও তাঁহাদের তিন শ্রাতাকে অতিশয় হিংসা করিতেন তথাপি রাজকুমার তাঁহার প্রাণরক্ষা করিবার জন্য ব্যস্ত হইয়া উঠিলেন।

নিজের হাতের অঙ্গুলিতে কাপড় জড়াইয়া বিমাতার দেহ হইতে সাপের রক্ত মুছিয়া লইলেন।

তিনি স্পর্শ করাতে রানির নিদ্রা ভঙ্গ হইল। তিনি নড়িতে আরম্ভ করিলেই রাজকুমার ঘর হইতে বাহির হইয়া গেলেন, কারণ তিনি পিতামাতার জীবন রক্ষার জন্য কী করিয়াছেন, তাহা কাহাকেও বলিবার ইচ্ছা করেন নাই।

কিন্তু তিনি যখন বাহির হইয়া যাইতেছেন; তখন রানি তাঁহাকে দেখিতে পাইলেন। দেখিয়াই তিনি রাজাকে ডাকিয়া তুলিলেন ও বলিলেন, ‘এই দেখো; তোমার ছোট পুত্রের ব্যবহার।

চোরের মতো তোমার শয়নঘরে প্রবেশ করিয়াছিল, হয়তো তোমাকে ও আমাকে মারিয়া ফেলিবার অভিসন্ধি ছিল।’ রাজা শুনিয়া পুত্রের প্রতি অতিশয় কুপিত হইলেন।

পরদিন প্রাতঃকালে রাজা কনিষ্ঠ পুত্রের প্রাণদণ্ড করিবেন, এই স্থির করিয়া সর্বাগ্রে জ্যেষ্ঠ পুত্রকে ডাকাইয়া বলিলেন, ‘আচ্ছা, বলো দেখি যাহাকে আমি প্রাণমন দিয়া বিশ্বাস করি, সে যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে, তবে তাহাকে কী করা কর্তব্য??

জ্যেষ্ঠ পুত্র বলিলেন, ‘মহারাজ! তাহার মাথা লওয়া উচিত, কিন্তু মাথা লইবার পূর্বে দেখিতে হইবে, সে প্রকৃত দোষী কি না।’ রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘শেষ কথাটুকু কেন বলিলে?’ কুমার উত্তর করিলেন, তবে শুনুন —

‘এক বৃদ্ধ স্বর্ণকারের এক পুত্রবধূ ছিল, সে পশুপক্ষীর ভাষা বুঝিত। একদিন রাত্রে স্বর্ণকারের পুত্র ও পুত্রবধূ গৃহে শয়ন করিয়া আছে, এমন সময়ে বাহিরে এক শৃগাল ডাকিতে লাগিল।

সেই শৃগালের ডাক শুনিয়াই বধূটি শয্যা হইতে উঠিয়া বাটীর নিকটস্থ নদীর দিকে চলিল। তাহার পতি মনে করিল, এ কী! শৃগালের ডাক শুনিবামাত্র বউ গৃহের বাহির হইয়া গেল কেন?

এই বলিয়া সেও উঠিয়া স্ত্রী পশ্চাৎ পশ্চাৎ গেল। গিয়া দেখে, তাহার স্ত্রী নদীর জলে নামিয়া একটি মৃতদেহ টানিয়া তীরের দিকে আনিতেছে। দেখিয়া তাহার মনে বড়ো ভয় হইল।

আবার দেখিল, সে সেই মৃতদেহের হাত কামড়াইতে লাগিল। তখন সে ভয়ে কাঁপিতে কাঁপিতে নিজের ঘরে আসিয়া শয়ন করিয়া রইল।

যথা সময়ে বউ ফিরিয়া আসিয়া শয়ন করিল। প্রাতঃকালে স্বর্ণকারের পুত্র উঠিয়া পিতাকে বলিল, “বাবা, কী মেয়ের সঙ্গে আমাকে বিয়ে দিয়েছ, ও তো মানুষ নয়, ও যে রাক্ষসী। কাল রাত্রে আমি স্বচক্ষে উহাকে মড়া খাইতে দেখেছি।”

শুনিয়া স্বর্ণকারের মনে বড়ো ভয় হইল। দুই পিতা-পুত্রে পরামর্শ করিল যে, বউকে ভুলাইয়া এক নিবিড় অরণ্যে ছাড়িয়া দিয়া আসিবে; সেখানে তাহাকে বাঘে খাইবে।

এই স্থির করিয়া পরদিন প্রাতঃকালে স্বর্ণকারের পুত্র স্ত্রীকে বাপের বাড়ি লইয়া যাইবার ছল করিয়া এক বনে লইয়া গেল। যখন আকাট জঙ্গলের মধ্যে গিয়াছে, তখন তাহারা সাপের ডাক শুনিতে পাইল।

সেই ডাক শুনিয়াই ওই বউ একটা কাঠি লইয়া একটা গর্ত খুঁড়িতে আরম্ভ করিল।

স্বর্ণকারের পুত্র মনে করিল, সর্বনাশ! এবার বুঝি আমাকে পুঁতিয়া ফেলিবে, এই ভাবিয়া পলাইতে যায়, এমন সময়ে তাহার স্ত্রী ডাকিয়া বলিল, “পলাইয়ো না, এই গর্তের মধ্যে একটা ব্যাং আছে, আবার অনেক মণিমাণিক্যও আছে।

সাপ বলিতেছে, যে গর্তটা খুঁড়িয়া ব্যাংটা বাহির করিয়া দিতে পারিবে, সে ওই সকল মণিমাণিক্য পাইবে।” শুনিয়া তাহার পতি বলিল, “সত্যি নাকি?” স্ত্রী বলিল, ‘তোমাকে আগে বলি নাই, আমি পশুপক্ষীর ভাষা বুঝি।

পূর্বে একদিন রাত্রে এক শিয়াল বলিয়াছিল, একটি মড়া ভাসিয়া যায়, যে তুলিতে পারিবে, সেই তাহার হাতের হীরকের অঙ্গুরি পাইবে।

তাই আমি সেই রাত্রেই নদীতে গিয়া মড়াটা টানিয়া তুলি এবং দাঁত দিয়া তাহার হাতের আংটিটা কাটিয়া লই, এই দেখো, সেই আংটি।” শুনিয়া স্বর্ণকারের পুত্রের চক্ষু খুলিয়া গেল।

সে বলিল, “বেলা অনেক হইয়াছে, আজ ফিরিয়া যাই।” এই বলিয়া সেই সকল মণিমাণিক্য কাপড়ে বাঁধিয়া স্ত্রীকে লইয়া ঘরে ফিরিয়া আসিল।

বাড়ির নিকটে গিয়া বলিল, “তুমি আগে বাড়িতে যাও, আমি দোকানে বাবাকে এই সকল মণিমাণিক্য দেখাইয়া আসি।” এই বলিয়া সে পিতার দোকানের দিকে গেল।

এদিকে বউ যেই বাড়িতে প্রবেশ করিয়াছে, অমনি বৃদ্ধ স্বর্ণকার সেখানে উপস্থিত। বৃদ্ধ ভাবিল, বনে ছাড়িয়া দিয়া আসিবার কথা, তবে কোথা হইতে বাড়ি ফিরিল? তবে বুঝি রাক্ষসী আমার পুত্রকে খাইয়া আসিয়াছে।

এই মনে করিয়া সে নিজ হস্তস্থিত হাতুড়ির দ্বারা তাহার মস্তকে এমন জোরে আঘাত করিল যে তাহাতেই তাহার প্রাণ গেল। শেষে তাহার পুত্রের মুখে সকল কথা শুনিয়া, বৃদ্ধ স্বর্ণকার হায় হায় করিতে লাগিল।

অতএব দেখুন, আগে না শুনিয়া মারিলে শেষে কীরূপ দুঃখ পাইতে হয়।’ শুনিয়া রাজা ভাবিতে লাগিলেন। পরে দ্বিতীয় পুত্রকে ডাকিয়া সেই প্রশ্ন করিলেন; তিনিও বলিলেন, বিশ্বাস

ঘাতকের প্রাণদণ্ড হওয়া কর্তব্য, কিন্তু মারিবার অগ্রে দেখা উচিত, সে প্রকৃত দোষী কি না। রাজা বলিলেন, ‘এমন কথা কেন বলিলে?’ দ্বিতীয় পুত্র বলিলেন, ‘তবে শুনুন—

‘এক রাজার একটি শুক পক্ষী ছিল। সে এক আশ্চর্য শুক পক্ষী। মানুষের ভাষা বুঝিতে ও বলিতে পারিত। রাজা মাঝে মাঝে শুক পক্ষীকে ছাড়িয়া দিতেন।

একদিন শুক পক্ষী বনে বেড়াইতে বেড়াইতে নিজের পিতামাতাকে দেখিতে পাইল পিতামাতা তাহাকে এক সপ্তাহের জন্য তাহাদের কোটরে গিয়া থাকিবার জন্য অনুরোধ করিল।

শুক বলিল, “আমি রাজার হুকুম বিনা তোমাদের সঙ্গে যাইতে পারি না।” এই বলিয়া সে রাজার নিকটে আসিয়া সাত দিনের ছুটি চাহিল। রাজা ছুটি দিলেন।

শুক মহানন্দে পিতামাতার নিকটে গেল। সাত দিনের পর যখন সে আসে, তখন তাহার পিতামাতা তাহাকে একটি অমৃত বৃক্ষের ফল দিলেন।

সে ফল যে খায়, সে যৌবন ফিরিয়া পায় এবং আর মরে না। সেই ফলটা মুখে করিয়া রাজভবনের দিকে যাইতে যাইতে শুকের পথে রাত্রি হইল।

শুক পক্ষী এক বৃক্ষের কোটরে ফলটি রাখিয়া বৃক্ষের শাখায় ঘুমাইতেছে, এমন সময় এক কালসাপ ওই ফলটিতে কামড়াইয়া বিষাক্ত করিয়া ফেলিল।

শুক তাহা জানিতেও পারিল না। পরদিন প্রাতে শুক পক্ষী আবার ফল লইয়া যাত্রা করিল। রাজা শুককে দেখিয়া বড়ো সুখী হইলেন এবং ফলটির আশ্চর্য গুণ শুনিয়া আহার করিবেন ভাবিলেন।

কিন্তু তাঁহার পাত্র-মিত্রেরা বলিলেন, “এমন কাজ করিবেন না, আগে অন্য কোনো প্রাণীকে খাওয়াইয়া দেখুন।” এই পরামর্শক্রমে একটি কাককে ফলটি খাওয়াইবামাত্র কাকটি মরিয়া গেল।

তখন রাজা ক্রোধ করিয়া শুক পক্ষীকে মারিয়া ফেলিলেন। ইহার পর ওই ফলের নাম বিষফল হইল। বিষফলের বীজটা এক স্থানে পুঁতিয়া দিয়া চারদিকে প্রাচীর দিয়া রাখা হইল।

যথা সময়ে এই বৃক্ষে ফল ফলিল। কিন্তু কেহই খায় না; সকলেই বলে, ও বিষফল, খেলেই মৃত্যু। এমনি কিছুদিন যায়, একবার সে দেশে দুর্ভিক্ষ হইল।

সেই সময় রাজধানীতে এক ব্রাহ্মণ বাস করিত, সে বড়ো দরিদ্র। ব্রাহ্মণ ও তাহার স্ত্রী দারিদ্র্যের জ্বালা আর সহ্য করিতে না পারিয়া একদিন রাত্রে মরিবার জন্য ওই বিষফল পাড়িয়া খাইল।

পরদিন প্রাতে শহরে রাষ্ট্র হইয়া গেল যে ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী বিষ গাছের ফল খাইয়া যৌবন ফিরিয়া পাইয়াছে।

তখন রাজা হায় হায় করিতে লাগিলেন, ‘কেন সবিশেষ অনুসন্ধান না করিয়া এমন শুক পক্ষীকে মারিলাম।” অতএব দেখুন মারিবার আগে অনুসন্ধান করা কর্তব্য।’

পরে তৃতীয় পুত্রকে ডাকিয়া সেই একই প্রশ্ন করাতে তিনি বলিলেন, ‘শুনুন— ‘এক রাজা মৃগয়া করিতে গিয়া শ্রান্ত ও তৃষ্ণার্ত হইয়া এক বৃক্ষতলে গিয়ে দেখিলেন যে, সেই বৃক্ষের কোটর হইতে বিন্দু বিন্দু জল পড়িতেছে।

তিনি তাহাকে জল মনে করিয়া একটা পাত্রে ধরিলেন। কিন্তু যখন পান করিতে যান, তখন তাহার অশ্ব এমনভাবে গা ঝাড়া দিয়া উঠিল যে, তাহাতে তাহার হস্তের পাত্র মাটিতে পড়িয়া গেল।

ইহাতে রাজা ক্রুদ্ধ হইয়া নিজ তরবারির দ্বারা অশ্বের গলদেশে এমন আঘাত করিলেন যে, তাহাতে সে প্রাণত্যাগ করিল। পরে জানিতে পারা গেল যে, যাহাকে জল মনে করিয়াছিলেন, তাহা জল নহে, তাহা সেই কোটরবাসী এক কালসাপের বিষ।

অশ্ব তাহা জানিতে পারিয়া গা ঝাড়া দিয়াছিল। খন অশ্বের জন্য রাজার মনে কী ক্ষোভই হইল। অতএব দেখুন, অনুসন্ধান না করিয়া শাস্তি দিতে নাই।’

এই বলিয়া রাজকুমার পূর্ব রাত্রের সমুদয় ঘটনা বর্ণনা করিলেন। রাজা শুনিয়া অবাক হইয়া গেলেন এবং পুত্র কীরূপে তাঁহার ও বিমাতার প্রাণরক্ষা করিয়াছে, তাহা জানিয়া তাহাকে অনেক আশীর্বাদ করিতে লাগিলেন।

আরও পড়ুন –

ঝলমল সিং

রাজপুত্রের ভয়

admin

I am Asis M Maiti. I am currently working in a private institution. After completion of my academic so far I am learning about many new concepts. Try to circulate these to the people nearby. To explore my thinking to worldwide I am in the world of blogging. Love to eat, travel, read.Love to explore various movies. You will not be bored here.Keep in touch.You are inspiration to me.

1 thought on “না বুঝে করিলে কাজ শেষে হায় হায়! – পস্তাতে তো হবেই।”

Leave a Comment